পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা বলেছেন,দেশের শাসকগোষ্ঠী পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের বিশ্বাস করে না। ধর্মীয় এবং সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখেন। এখানকার মানুষদের সঙ্গে যুগের পর যুগ ধরে বৈষম্য করা হয়েছে। ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতিগত বৈষম্য বিরাজমান। এখনো সেই বৈষম্য বিদ্যমান। এই বৈষম্য দূর করতে যুবসমাজকে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।’গত ১৩ ফেব্রুয়ারী-২৫,বৃহস্পতিবার রাঙামাটি জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে এক যুব সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সন্তু লারমা আরো বলেন,‘বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম সেনা শাসনাধীন। আশির দশকে অপারেশন দাবানল, ১৯৯৭ সালে পার্বত্য শান্তি চুক্তির পর অপারেশন উত্তরণ নামে সেই সেনাশাসন বিদ্যমান আছে।’
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে চাকমা সার্কেল চিফ রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় বলেন, ‘কৃত্রিম সংকট তৈরি করে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে পাহাড়ের স্থায়ী বাঙালিদের সঙ্গে পাহাড়িদের কোনো বিরোধ নেই। আদিবাসী মানে বাঙালি মাইনাস নয়, এ ভুল মানসিকতসা ত্যাগ করতে হবে। এ বিরোধ নিরষনে আমাদের সকলের কাজ করতে হবে।’
তিনি বলেন, জনসংখ্যার আনুপাতিক হিসাব দেখিয়ে একটি অংশ দাবি তুলেছে, জেলা পরিষদ আইন, ভূমি কমিশন আইন পরিবর্তন করতে হবে। সেখানে বাঙালি ভাইস চেয়ারম্যান দাবি করা হচ্ছে।’
এ দাবীকে তামাশা উল্লেখ করে রাজা বলেন, ‘তা যদি হয় তাহলে ডিসি যদি বাঙালি হয়, তাহলে এডিসি পাহাড়ি, ব্রিগেড কমান্ডার বাঙালি হলে কমান্ডিং অফিসার পাহাড়ি হবে। বাংলাদেশ রাষ্ট্র কি কাজটা করবে?’
তিনি আরও বলেন, ‘এখানে বৈষম্য জারি রাখা হয়েছে। বিদেশ থেকে কোনো রাষ্ট্রদূত রাঙামাটিতে আসলে আমার সঙ্গে দেখা করতে চাইলে অনুমতি দেওয়া হয় না। রাজবাড়ীতে যেতে পারেন না এসব অতিথি।’
তারুন্যের উৎসবের এি যুব সমাবেশে বিশেষ আলোচক ছিলেন রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার। বক্তব্য দেন আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কে এস মং মারমা, শিক্ষাবিদ শিশির চাকমা, প্রভাষক আনন্দ জ্যোতি চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক বিশ্লেষক তনয় দেওয়ান, সাংবাদিক হিমেল চাকমা, সৈকত রঞ্জন চৌধুরী, উদ্যোক্তা রোজিনা ইসলাম প্রমুখ।#