
শঙ্খধ্বনি আর ঢাকের বাজনায় মুখরিত হয়ে উঠেছিল রাঙামাটির কলেজগেইট দুর্গা মাতৃমন্দির চত্বর। ধূপধুনোর গন্ধে ভরে উঠেছিল চারদিক। রঙিন সাজসজ্জায় সেজে উঠেছিল মন্দির এলাকা। একে একে ভক্তরা প্রবেশ করছিলেন ভক্তিভরে, কেউ প্রণাম করছেন, কেউ প্রদীপ জ্বালাচ্ছেন। পাহাড়ি শহর রাঙামাটি যেন পরিণত হয়েছিল উৎসবের নগরীতে।
শুভকর্ণ সংঘের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো শ্রী শ্রী সার্বজনীন গণেশ পূজা। এ উপলক্ষে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় অংশ নেন স্থানীয় রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট সমাজসেবক বিজয় কৃষ্ণ দে। সঞ্চালনা করেন রূপন কান্তি দাশ।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি কেন্দ্রীয় সংসদের সহধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট দীপেন দেওয়ান। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাঙামাটি জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন তালুকদার দীপু।
এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি জেলা বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক বাচ্চু মিয়া, জেলা জাসাসের সভাপতি কামাল হোসেন, জেলা যুবদলের সহসভাপতি শাহ আলম, সহসাধারণ সম্পাদক মো. কামাল, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক রহিম উদ্দিন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরনবী, যুবদল নেতা মো. আব্দুলসহ আরও অনেকে।
অ্যাডভোকেট দীপেন দেওয়ান বলেন,
গণেশ পূজা আমাদের মনে করিয়ে দেয় ভিন্ন ধর্মের মানুষ হলেও আমরা সবাই একই সমাজের অংশ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করা মানে দেশকে শক্তিশালী করা। আজকের সময়ে একে অপরের ধর্মকে সম্মান জানানোই আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
রাঙামাটি জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন তালুকদার দীপু বলেন,
আমরা চাই রাঙামাটি হোক সম্প্রীতির মডেল। পাহাড়ি-বাঙালি, হিন্দু-মুসলিম-খ্রিস্টান সবাই মিলেমিশে থাকবে। এ ধরনের আয়োজন আমাদের সেই ঐতিহ্যকে আরও দৃঢ় করে।
আলোচনা শেষে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। ভক্তরা মাথা নত করে প্রার্থনা করেন শান্তি, সম্প্রীতি ও সমৃদ্ধির জন্য। মন্দিরের উঠোনে তখন এক অন্য দৃশ্য—শিশুরা আনন্দে মেতে উঠেছে, প্রবীণরা গল্প করছেন, কেউবা মুগ্ধ হয়ে দেখছেন প্রতিমার সৌন্দর্য।
সন্ধ্যার আঁধার নামতেই প্রদীপের আলোয় ঝলমল করে ওঠে মন্দির চত্বর। পাহাড়ি শহরের আকাশে ছড়িয়ে পড়ে উৎসবের রঙ, আনন্দের সুর।
রাঙামাটির এই আয়োজন আবারও মনে করিয়ে দিল—ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। সম্প্রীতির বাংলাদেশেই এর সৌন্দর্য।