Logo
শিরোনাম :
রাঙ্গামাটির মানিকছড়িতে যৌথ উদ্যোগে ঈদ উপহার বিতরণ আসছে ঈদের ছুটি হতে পারে ৯ দিন পার্বত্য উদ্যোক্তাদের পাশে থাকবো- অঙ্গিকার বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার রাঙ্গামাটিতে ২০০ পাহাড়বাসীর মাঝে সেনাবাহিনীর ইফতার ও ঈদ শুভেচ্ছা সামগ্রী বিতরণ দলবাজ সাংবাদিক যখন পল্টিবাজির ওস্তাদ ! বাফুফে, বিসিবি সদস্যদের নিয়ে বরিশাল স্পোর্টিং ক্লাবের ইফতার দোয়া-মাহফিল অনুষ্ঠিত। কাপ্তাই হ্রদে ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রাঙামাটিতে ১৫ মার্চ,ভিটামিন ”এ” ক্যাপসুল পাবে ৮৫ হাজার শিশু সাজেকে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় লুসাই ও ত্রিপুরা পরিবারের পাশে – বিজিবি নালিতাবাড়ীতে চেক ছিনতাই ও মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

বাংলাদেশের সব আন্দোলন- সংগ্রামে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠী উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রেখেছে : অধ্যাপক গোলাম সারোয়ার সুজন

বিশেষ প্রতিনিধি(গিরি সংবাদ) রাজশাহী / ২৭ বার দেখা হয়েছে
শেষ আপডেট : মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে বাংলাদেশে সমস্ত আন্দোলন সংগ্রামে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি “আদিবাসী” জনগোষ্ঠী উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, গবেষক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. গোলাম সারোয়ার সুজন রাবিতে দুই দিনব্যাপী ‘বই ও প্রামাণ্য তথ্যচিত্র প্রদর্শনী’র সমাপনী অনুষ্ঠানে এসব মন্তব্য করেন।

তিনি আরো বলেন,জুলাই গণঅভ্যুত্থান মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আন্দোলন সংগ্রামেও পাহাড়ি জনগোষ্ঠী বিপুলভাবে অংশগ্রহণ করেছেন বলে উল্লেখ করেন।

মহান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)-এর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় জুম্ম শিক্ষার্থী পরিবারের সহযোগিতায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই দিনব্যাপী ‘বই ও প্রামাণ্য তথ্যচিত্র প্রদর্শনী’ কর্মসূচির সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এ কথা বলেন।

গত ১৬-১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ দুই দিনব্যাপী কর্মসূচিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাস, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন ছবি, বই, প্রবন্ধ প্রদর্শনসহ পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের রজতজয়ন্তী উপলক্ষে নির্মিত ভিডিও ডকুমেন্টারি (১৯৮৯-২০১৩) লড়াই সংগ্রামে ইতিহাস, তানভীর মোকাম্মেল নির্মিত কর্ণফুলী কান্না, লাইভ ইজ নট আওয়ার ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রজেক্টরের মাধ্যমে প্রদর্শন করা হয়।

কর্মসূচিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

গতকাল সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এক সংক্ষিপ্ত আলোচনার সভার মধ্যে দিয়ে দুই দিনব্যাপি কর্মসূচি সমাপ্ত হয়।

আলোচনা সভায় বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, গবেষক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. গোলাম সারোয়ার সুজন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় জুম্ম শিক্ষার্থী পরিবারের সদস্য চয়েচ তালুকদার, গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের তারেক আশরাফ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের রাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক শামীন ত্রিপুরা বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও রাবির শিক্ষার্থী, ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মী ও মানবাধিকার সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সহযোগী অধ্যাপক গোলাম সারোয়ার বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান সমস্ত রাজনৈতিক অধিকারের স্বপ্ন অর্থাৎ রাষ্ট্রের কাছে ন্যূনতম মৌলিক চাহিদাগুলো পাওয়ার জায়গা থেকে যে বৈষম্য বিরোধী অর্থাৎ সমাজে কোন বৈষম্য থাকবে না, সবার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে সে জায়গা থেকে সমতলে যারা এই আন্দোলনে শরিক হয়েছিলেন তার সাথে সাথে আমরা দেখেছি পাহাড়েও তারা (পাহাড়ি জনগোষ্ঠি) এই ফ্যাসিস্ট বিরোধী অভ্যুত্থানে তারা বিপুল ভূমিকা রেখেছেন। তেমনিভাবে বাংলাদেশে বিগত আন্দোলন সংগ্রামেও তাদের ঐতিহাসিক ভুমিকা রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, পাহাড়ি জনগোষ্ঠীগুলোর ভূমি এবং তাদের যে সম্পদ আছে তা এখানকার বড় পুঁজি, বণিক গোষ্ঠী এবং বিভিন্ন স্বার্থন্বেষী গোষ্ঠী সেগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায় এবং দখল করতে চায়। সে জন্য তাদেরকে নানাভাবে চিত্রায়িত করা হয়। আমাদের কাছে তাদের সঠিক তথ্য পৌঁছায় না। সে জায়গা থেকে তারা এই প্রদর্শনী আয়োজন করার মধ্য দিয়ে তাদের অবস্থান তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন সেজন্য তাদেরকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই এবং আগামীতে আরো এ ধরনের কর্মসূচির আয়োজন করে তাদের পরিচিতি সঠিকভাবে মানুষের কাছে তুলে ধরবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।

পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ গণতান্ত্রিক সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছে মন্তব্য করে গোলাম সারোয়ার সুজন বলেন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছে, আগামীতেও আন্দোলন সংগ্রামে সেভাবে ভূমিকা রাখবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে “আদিবাসী” জনগোষ্ঠী যারা আছেন তারা সমতলে এবং পাহাড়ে বসবাস করেন। তারা নানা সংগঠনের বিভক্ত হয়ে রয়েছে। বৃহত্তর স্বার্থে জাতীয় বিভিন্ন ইস্যুতে তারা একটা প্লাটফর্মে সহবস্থান করবেন এবং তাদের সাথে প্রগতিশীল রাজনৈতিক যারা আছেন তারা একাত্মতা পোষণ করবেন, সংগ্রামে সহযোগিতা করবেন। এর মধ্য দিয়ে তাদের ভূমিসহ ন্যায় সঙ্গত অধিকারের বিষয়গুলো সামনে আরো ভালোভাবে উঠে আসা সম্ভব হবে।

তিনি আরো বলেন, আমরা গত পনের বছরে দেখেছি পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের “আদিবাসী”, নিপীড়িত বাঙালি, শ্রমজীবী সাধারণ কৃষক, মেহনতী মানুষের উপর কীভাবে নিপীড়ন চালানো হয়েছে। আন্দোলন সংগ্রামে সমন্বিতভাবে কাজ করতে পারলে আমরা অনেক ক্ষেত্রে সফল হবো।

তিনি আগামীতে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনসমূহের সহযোগীতায় উত্তরবঙ্গে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বড় আকারে এ ধরনের কর্মসূচির আয়োজন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। আগামী দিনের আন্দোলন সংগ্রামে মানুষের অধিকার আদায়ে, বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য যে কর্মসূচি হবে সেখানে সবার অংশগ্রহণ আশা করেন তিনি।

সভায় বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রকৃত ইতিহাস ও বাস্তবতা তুলে ধরতে এ ধরনের প্রদর্শনীর প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করেন এবং এটিকে একটি সূচনা হিসেবে অভিহিত করেন। তারা তথ্যভিত্তিক সচেতনতা গড়ে তোলা ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে তরুণ প্রজন্মকে আরও বেশি সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Theme Created By Web Themes BD.Com