বাংলাদেশের জাতীয় গৌরবের দিন যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করেছে পার্বত্য রাঙামাটিবাসী। সুর্যোদয়ের সাথে সাথে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা। রাঙামাটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার বেদীতে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়ে সোমবার সকাল সাড়ে ৬টায় পুষ্পমাল্য অর্পণের মধ্যদিয়ে এই মহান দিবসের কার্যক্রম শুরু করেন রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিব উল্লাহ।
এর পরপরই রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার,রাঙামাটির পুলিশ সুপার ড.ফরহাদ হোসেন,পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষে ভাইস চেয়ারম্যান রিপন চাকমা,পৌর প্রশাসক নাসরিন সুলতানা,বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ সহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধি, রাঙামাটি প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ এবং পরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও দলটির অঙ্গ-সহযোগি সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতৃবৃন্দ, জামায়াতে ইসলামী,এলডিপিসহ,বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদ বেদীতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করার পাশাপাশি দলীয় শপথবাক্য পাঠ করা হয়।
সর্বস্তরের জনগণ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে স্মরণ করেন জাতির শ্রেষ্ট বীর সুর্য্য সন্তানদের ।
অন্যদিকে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। সকালে কুমার সমিত রায় জিমনেশিয়াম প্রাঙ্গণে এ সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ।
জেলা প্রশাসনের আয়োজিত সংবর্ধনায় অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন,দেশের সূর্যসন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ,তাদের স্বপ্নের বাংলাদেশের প্রতাশ্যা এখনো পূরণ হয়নি। সকলকে দেশের জন্য একসাথে কাজ করার আহবান জানান বক্তারা।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জেলা পুলশি সুপার এস এম ফরহাদ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল হোসেন চৌধুরী,বীর মুক্তিযোদ্ধা সুধীর চন্দ্র দাশ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক সৈকত রঞ্জন চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।
এর আগে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জিমনেশিয়াম প্রাঙ্গণে তিন দিনব্যাপী বিজয় মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ।
তার পরপরই শহীদ মিনারের বিপরীত দিকে অবস্থিত স্মৃতিসৌধ,শহীদ এম আব্দুল আলীর স্মৃতিস্তম্ভে এবং শহীদ আব্দুস শুক্কুরের স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণ করা হয়। উল্লেখ্য,বিজয় দিবসের প্রথম প্রহর ১৬ ডিসেম্বর রাত ১২ টা ১মিনিটে মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন ও মুক্তিযোদ্ধা হাজী কামাল উদ্দীন শহীদ বীরমুক্তিযোদ্ধা শুক্কুরের স্মৃতিস্তম্ভে ফুলের তোড়ায় শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পন করতে দেখা গেলেও ভোর হতেই এই তোরণ আর স্মৃতির বেদীতে পাওয়া যায়নি। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন,নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাটে বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
এদিকে এদিন সকাল ৮ টায় রাঙামাটি সার্কিট হাউজে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এ সময় রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ,পুলিশ সুপার ড.ফরহাদ হোসেনসহ প্রশাসনের বিভিন্ন লোকজন জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সময় উপস্থিত ছিলেন।
সেখানে আলোচনা সভা,পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিকাল ৩টায় মারি স্টেডিয়ামে আয়োজন থাকছে ক্রীড়া অনুষ্ঠানের। একই স্থানে মহিলা ক্রীড়া অনুষ্ঠান।
সন্ধ্যা ৬টায় রাঙামাটি শহরের বিভিন্ন জন সমাগম স্থলে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্র ও প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনী হয়। জেলার সকল মসজিদ মন্দির ও গির্জায় বিশেষ মুনাজাত ও প্রার্থনা করা হয়।এছাড়া হাসপাতাল, জেলখানা,এতিমখানা,শিশু পরিবার ও ভবঘুরে প্রতিষ্ঠান সমূহে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়। বিনোদনমুলক স্থান ও পর্যটন কেন্দ্র শিশুদের জন্য সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিনা টিকেটে উন্মুক্ত রাখা হয়। #