দেশে এখন সর্বত্র অরাজকতা বিরাজ করছে,কোথাও কারো নিয়ন্ত্রণ, জবাবদিহীতা নেই। আইন-শৃঙ্খলার পরিরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। পুলিশ এখন নাম মাত্র,পুলিশের মনোবল ভেঙ্গে গেছে। যখন-তখন যেখানে সেখানে, কারণে-অকারণে, রাস্তা-ঘাট বন্ধ করে, হরতাল- অবরোধ,মিছিল-মিটিং ,হামলা- মামলা। এক চরম অরাজকতা পরিস্থিতি বিরাজ করছে সারা দেশময়। কেউ,কাউকে মানছে না, এভাবে একটা উন্নয়নশীল দেশ চলতে পারেনা। এরুপ চলতে থাকলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বারো টা বেজে তেরোটা বেজে যাবে। তাই সর্বাগ্রে,দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করার আহ্বান জানান, জনসংহতি সমিতি,জেএসএসের সহ-সভাপতি,সাবেক এমপি উষাতন তালুকদার।
আজ রবিবার,২ডিসেম্বর সকাল ১১টায় শহরের কুমার সুমিত রায় জিমনেসিয়াম প্রাঙ্গনে রাঙ্গামাটি পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির আয়োজনে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ২৭তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গণসমাবেশ এ বক্তব্য রাখেন তিনি।
রাঙামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বিরোধী ও জুম্ম স্বার্থ পরিপন্থী সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে বৃহত্তর আন্দোলন জোরদার করার আহবান জানিয়ে এ গনসমাবেশ অনুষ্টিত হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সাধারণ সম্পাদক সহ-সাধারণ সম্পাদক উ উইন মং জলির সভাপতিত্বে জনসংহতি সমিতির শীর্ষ নেতা সাবেক সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদার বক্তব্যে আরো বলেন,আজকে আপনাদের কাছে,এ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে,আপনারা নিরেপক্ষ,আপনারা বৈষম্যবিরোধী,আপনারা নতুন বাংলাদেশের জন্ম দিয়েছেন। আমরা আশা রাখব,আপনারা পার্বত্য সমস্যা গভীর ভাবে চিন্তা করবেন। সংখ্যায় সামন্য হতে পারে পাহাড়ের মানুষ,তারাও মানুষ তাদেরও আত্ম-মর্যদা রয়েছে,রয়েছে নিজেদের ভাষা-কৃষ্টি-সংস্কৃতি-ঐতিহ্য। সুতরাং পাহাড়বাসীকে অবেহেলা করে,পার্বত্য সমস্যা পাশ কাটিয়ে গেলে চলবেনা।
রাষ্ট্রীয় ধর্ম নিরেপক্ষাকতা নিয়ে তিনি বলেন, সময়ের জ্ঞাতার্থে আপনাদের জানাচ্ছি,এ দেশ পিপলস রিপাবলিক অব বাংলাদেশ,এখন কি এটাকে, ইসলামিক রিপাবলিক অব বাংলাদেশ বানাতে চাচ্ছেন নাকি? আপনারা সংখ্যায় ৯০% হতে পারেন! আমরা অন্যানরা ১০% হতে পারি।
সময় অনেক গড়িয়ে গেছে,পৃথিবী অনেক বদলে গেছে, এখন, একবিংশ যুগ, এ যুগে আপনারা পিছনে চলে যাবেন নাকি? আমাদের ১০% কে আপনারা কি গণনায় আনবেন না? রাষ্ট্রের ধর্ম লাগে না, সেটা লাগে ব্যাক্তির,মানুষেই ধর্ম ব্যবহার করে। রাষ্ট্র নয় !
অপরদিকে শিক্ষাবীদ,গবেষক শিশির চাকমা বলেন,এ শান্তিচুক্তির দায় শুধুই জন সংহতি সমিতির,অবশ্যই নয়। এ চুক্তি হয়েছে জনসংহতি সমিতি ও সরকারের মধ্যে ঠিক আছে। এ শান্তিচুক্তি জনসংহতি সমিতির একার নয়,এটি সমগ্র পার্বত্য অঞ্চলের বসবাসরত ১৩ টি জাতিসত্বা সহ এখানে বসবাসরত স্থায়ী বৃহত্তর বাঙগালী জনগোষ্টিরও,এটা আমাদের বুঝতে হবে,মানতে হবে।
সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ শিশির চাকমা, জনসংহতি সমিতির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক জুয়েল চাকমা, মহিলা সমিতির নেত্রী আশিকা চাকমা,জনসংহতি সমিতির নেতা অরুণ ত্রিপুরাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
গণসমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন,পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণে ভুমি সমস্যা বেড়েই চলেছে। চুক্তি মোতাবেক গঠিত প্রতিষ্ঠানগুলো কার্যকর না হওয়ায় পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে।
বক্তারা বলেন,পাহাড়ের অশান্ত পরিস্থিতি দূর করতেই শান্তিচুক্তি(পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি) হয়েছিল। কিন্তু সেই চুক্তি বাস্তবায়ন না করায় পাহাড়ে এখনো বৈষম্য রয়ে গেছে।
আজ যখন দেশের মানুষ একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্রের, সবার জন্য সম অধিকারের স্বপ্ন দেখছে, সেই পরিস্থিতিতে পাহাড়িদের ক্ষেত্রেও বৈষম্য দূর করতে চাইলে শান্তিচুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করে পাহাড়ি ক্ষুদ্র নৃ- জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহবান জানান।
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত জনগোষ্ঠীর শান্তি প্রতিষ্ঠায় তৎকালীন সরকারের সাথে পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষর করে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি( জেএসএস)। #