Logo
শিরোনাম :
প্রাথমিক ভাবে দেশের চারটি নোটের নকশায় আসছে পরিবর্তন। বাঘাইছড়িতে কৃষকদলের ৪৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন রাঙ্গামাটিতে পুলিশের অভিযানে ৫০০ পিস ইয়াবা : ৫৬,৫০০ টাকা উদ্ধার সহ ১জন গ্রেফতার। রাঙ্গামাটিতে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি’র আগমনে বিশেষ কল্যাণ সভা অনুষ্ঠিত। দেশের সর্বত্রই অনিয়ম থাকলেও, তবে পার্বত্য এলাকায় তা একটু বেশি- ড. ইউনূস শেরপুরে পালিত হল আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ আয়ান শর্মার বিরুদ্ধে আবারও মামলা : তীব্র প্রতিবাদ বিএসসি’র। চন্দনাইশ জোয়ারা মাদ্রাসা প্রিন্সিপাল মাওলানা আমিনুর রহমানের ইন্তেকাল খেজুরের তৈরি কোমল পানীয় বাজারে আনলো সৌদিআরব ছাত্রলীগ নেতাকে না পেয়ে নামাজরত মাকে কূপিয়ে হত্যা করল দূর্বৃত্তরা।

খেলাপি ঋণের সব তথ্য সামনে আনলে ভয়াবহ তথ্য মিলবে!

অনলাইন ডেস্ক / ১০ বার দেখা হয়েছে
শেষ আপডেট : সোমবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৪
খেলাপি ঋণের সব তথ্য সামনে আনলে ভয়াবহ তথ্য মিলবে!

দেশের ব্যাংকখাতের সবচেয়ে বড় সমস্যা বিপুল অঙ্কের ঋণ খেলাপি। যা ১৫ বছরে বেড়েছে দুই লাখ ৬২ হাজার ৪৯৬ কোটি টাকা। আর গেল সেপ্টেম্বর শেষে বিতরণ হওয়া মোট ১৬ লাখ ৮২ হাজার ৮২১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ঋণের মধ্যে ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশই খেলাপি। দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর এই খেলাপি ঋণ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বেড়েছে বেপরোয়া গতিতে। ব্যাংকাররা বলছেন, খেলাপি ঋণের তথ্য যেভাবে গোপন করা হয়েছে তা যদি পুরোপুরি সামনে আনা হয় তাহলে আরও ভয়াবহ তথ্য মিলবে।

দেশের ব্যাংক খাতের সবচেয়ে বড় সমস্যা বিপুল অঙ্কের খেলাপি ঋণ। দীর্ঘদিন ধরে চলমান এ সমস্যা এখন প্রকট আকার ধারণ করেছে। বিভিন্ন সময় খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার বিষয়ে কর্তৃপক্ষ নানা অঙ্গীকার করলেও তা রক্ষা করা হয়নি।

আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরে দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণ বেড়েছে বেপরোয়া গতিতে। আর্থিক খাতে সুশাসন না থাকায় বড় বড় জাল-জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। এর মাধ্যমে বিতরণ করা ঋণের প্রায় সবই খেলাপি হয়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মাত্রাতিরিক্ত হারে বেড়েছে খেলাপি ঋণ।

আর এসব ঋণের পেছনে দায় থাকার অভিযোগ রয়েছে এস আলম, নজরুল ইসলাম মজুমদার ও সালমান এফ রহমানের মতো অনেকের বিরুদ্ধে। শুধু ঋণ নিয়েই ক্ষান্ত হয়নি। লাখ কোটি টাকার বেশি করেছে পাচার।

২০০৯ সালের জুন পর্যন্ত ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। সেখান থেকে এখন বেড়ে ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি ৩১ লাখ টাকা। অর্থাৎ পলাতক শেখ হাসিনা সরকারের আমলে খেলাপি ঋণ বেড়েছে দুই লাখ ৬২ হাজার ৪৯৬ কোটি টাকার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৮২ হাজার ৮২১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। সেই হিসাবে খেলাপি ঋণ মোট ঋণের ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এ সময় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় এক লাখ ২৬ হাজার ১১১ কোটি ৫২ লাখ টাকা। যা বিতরণ করা ঋণের ৪০ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

এছাড়া ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় এক লাখ ৪৯ হাজার ৮০৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। যা বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। সেই সাথে এ সময়ে বিদেশি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় তিন হাজার ২৪৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। যা বিতরণ করা ঋণের চার দশমিক ৯৯ শতাংশ। একই সাথে বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় পাঁচ হাজার ৮১৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। যা বিতরণ করা ঋণের ১৩ দশমিক ২১ শতাংশ।

ব্যাংকাররা বলছেন গত ১৫ বছরে খেলাপি ঋণের তথ্য যেভাবে গোপন করা হয়েছে তা যদি পুরোপুরি সামনে আনা হয় হয় তা আরও ভয়াবহ বেড়ে যাবে।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান বলেন, ‘ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রিতে লুটপাট হয়েছে। সে লুটপাট পত্রিকায় যা আসে তার চেয়ে বেশি হয়েছে। এই যে ব্যাংকিং খাতে বলা হচ্ছে দুই লাখ ৮৫ হাজার মানে প্রায় তিন লাখ কোটি টাকার কাছাকাছি খেলাপি আছে। আমি বলবো যে প্রকৃত সব পর্দা যদি উন্মোচন করা হয় তাহলে সেই খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও বাড়বে।’

শুধু সঠিক ঋণের তথ্য নয়, ঋণের বিপরীতে রাখা জামানতের মাধ্যমে ছোট ঋণ আদায় এবং ফরেন্সিক নিরীক্ষার মাধ্যমে বড় ঋণ আদায় করে ব্যাংক খাতের দুরবস্থা কমানোর পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

অর্থনীতিবিদ আল আমিন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে যাদের কিছু কো-লেটারার খুঁজে পাওয়া যাবে বা মর্টগেজ খুঁজে পাওয়া তা অকশনে তুলে টাকা আদায় করার চেষ্টা করতে হবে। কিন্তু ম্যাক্সিমাম যে বড় বড় ঋণগুলো যেগুলো বেনামে হয়েছে তাদের ধরলে হয়তো জানাও যাবে না যে আসলে মাস্টারমাইন্ড করার ছিল। এজন্য ফরেনসিক অডিটটা খুব জরুরি এখানে। তার মাধ্যমেই বের হয়ে আসবে রিলেটেড পার্টি কারা।’

তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু ফিগারগুলো বলবো এবং এগুলো নিয়ে আলোচনা করবো, দিনশেষে যদি এগুলোকে রিকভারির প্ল্যান না থাকে, তাহলে মূলধারা অর্থনীতির টাকাগুলো ফেরত আসবে না। এবং অর্থনীতির যে মন্দা চলছে বা ব্যাংকগুলোর যে দুরবস্থা চলছে তাতে কিন্তু অনেক ধরনের সমস্যা এই ব্যাংকগুলোই ফেস করবে।’

সেই সাথে ঋণ আদায়ের পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে খেলাপি ঋণের মাধ্যমে যারা ব্যাংক খাতের ক্ষতি করে আসছে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Theme Created By Web Themes BD.Com