এক সপ্তাহেও উন্নতি হয়নি বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতির। ওপারে জান্তা বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির তুমুল সংঘর্ষ কিছুটা কমলেও থেমে থেমে শোনা যাচ্ছে গুলির শব্দ। শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও আতঙ্ক কাটেনি সীমান্ত এলাকায়।
এদিকে গতাকাল বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা থেকে আজ শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৫টা পর্যন্ত সীমান্তের কাছাকাছি এলাকা গোলাগুলি আর মর্টার শেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেঁপে উঠেছে।
টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্ষ্যং উনছিপ্রাং এলাকার সঙ্গে মিয়ানমারের দূরত্ব মাত্র ২ কিলোমিটার। কাছাকাছি হওয়ায় মিয়ানমারে কী হচ্ছে তা অনেকটা খালি চোখেই দেখা যায়।
উনছিপ্রাং সীমান্তের স্থানীয়দের দাবি, ওপারে ঢেঁকিবুনিয়া এলাকায় মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ঘাঁটিগুলো দখল করে দক্ষিণ দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আরাকান আর্মি ও অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো। এই কারণে টেকনাফ অংশে মিয়ানমারের শহর শীলখালী, বলিবাজার ও কুইরখালী থেকে এসব বিস্ফোরণের শব্দ আসছে।
হোয়াইক্ষ্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ আনুয়ারী বলেন, উনছিপ্রাং, কানজড়পাড়া, খারাংখালী ঝিমনখালী এলাকায় ভারী অস্ত্রের বিকট শব্দ শোনা যায়। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে সীমান্তের কাছাকাছি থাকা চিংড়ি চাষিরা। কয়েক দিন আগেও বসতঘরে গুলি এসে পড়ে। অল্পের জন্য জীবন রক্ষা পায়। শোনা যাচ্ছে শীলখালী, বলিবাজার ও কুইরখালী ঘাঁটি দখল নিতে বিদ্রোহীরা হামলা করছে।
গত শনিবার থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য এ পর্যন্ত বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী, সেনাবাহিনী, কাস্টমস কর্মকর্তাসহ ৩৩০ জন। প্রশাসনিক সুবিধার জন্য তুমব্রুতে রাখা ১শ’ বিজিপি সদস্যকে টেকনাফের হ্ণীলা উচ্চ বিদ্যালয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
গত শনিবার শুরু হওয়া সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য এপারে চলে এসেছে মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী, সেনাবাহিনী, কাস্টমস অফিসারসহ বিভিন্ন সংস্থার ৩৩০ জন সৈনিক। এদের মধ্যে ২ শিশু ও ২ নারী রয়েছে। এদিকে প্রশাসনিক সুবিধার জন্য তুমব্রুতে রাখা ১০০ জন বিজিপি সদস্যকে নিয়ে যাওয়া হয় টেকনাফের হৃীলা উচ্চবিদ্যালয়ে।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারে চলা সংঘর্ষে বাংলাদেশের অভ্যান্তরে এখন পর্যন্ত ২ জন নিহত ও ৯ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন।