
বাংলাদেশের সংস্কারের নামে অসংখ্য কমিশন গঠিত হয়েছে। বাংলাদেশে বহু জাতি আছে,বহু সংস্কৃতি আছে, তাদের অনেক আবেদন-নিবেদন আছে। কিন্তু তাদের না শুনে,সেগুলোকে প্রাধান্য না দিয়ে,কাজ করা হচ্ছে। সরকার যে অন্তর্ভূক্তিমূলক বাস্তবতার কথা বলছে,সেটা আমরা এক্ষেত্রে দেখতে পারছি না।
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা(সন্তু লারমা) আন্তর্জাতিক ও জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত যুব দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মঙ্গলবার ১২ আগষ্ট-২৫ খ্রীঃ আঞ্চলিক পরিষদের হলরুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সন্তু লারমা আরো বলেন, বাংলাদেশে বাংলা জাতিসহ ৫২টি জাতি বসবাস করে। একটি বহু ভাষা, বহু সংস্কৃতি ও বহু জাতির দেশ। এদেশে বহু ভাষাভাষীর মানুষ বসবাস করে। এতে বুঝা যায় বাংলাদেশ একটা বহু ভাষাভাষী ও বহু সংস্কৃতির দেশ। তাহলে সব ভাষাভাষী,জাতিকে নিয়ে আমাদের এক সাথে এগিয়ে চলতে হবে। অন্তর্ভূক্তিমূলক বাংলাদেশের বাস্তবতা যাতে আমরা দেখতে পারি, সেটা যেন শুধুমাত্র কাগজ কিংবা মুখের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে। কিন্তু এখানে অন্তর্ভূক্তিমূলক বাস্তবতা আমরা দেখতে পাই না।
যুব সমাজের কর্মকাণ্ড বিষয়ে তিনি বলেন,পার্বত্য এলাকার যুব সমাজের একটি অংশ এখনো যারা যন্ত্র নির্ভর কিংবা প্রযুক্তি নির্ভর যে জীবন, সেটার ওপর সম্পূর্ণ গা ভাসিয়ে দিয়ে জীবনকে ভাবছে না, তারা বাস্তবতাকে মূল্যায়ন করে পার্বত্য চট্টগ্রামের কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। সরকার বলছে অন্তর্ভূক্তিমূলক সব পক্ষকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আজকে সেটাই বাস্তবতা। একটি পক্ষকে নিয়ে চলা যায় না। যুবকদের প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, মানবতাবাদী ও নীতি-আদর্শকে সামনে রেখে যুব সমাজের প্রকৃত যে অধিকার সেই অধিকারের জন্য কাজ করার আহ্বান জানান সন্তু লারমা।
‘প্রযুক্তি নির্ভর যুবশক্তি, বহুপাক্ষিক অংশীদারিত্বে অগ্রগতি’ এই প্রতিপাদ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় আঞ্চলিক পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা সুবর্না চাকমার সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন পরিষদের সদস্য এডভোকেট চঞ্চু চাকমা,লেখক শিশির কান্তি চাকমা,সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের পরিচালক জীতেন চাকমা, মনোঘরের নির্বাহী পরিচালক অশোক চাকমা,সুজন জেলা সম্পাদক এম জিসাম বখতিয়ার, সাবেক ছাত্রনেতা তনয় দেওয়ান, নিপুন ত্রিপুরা, ইরফানুল হক রোমেল, রোমেন চাকমা,এশা দে,আশিকা চাকমাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সভা সঞ্চালনা করেন পরিষদের জনসংযোগ কর্মকর্তা বিমল কান্তি চাকমা ও সহকারী নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা চাকমা।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন,যুবকদের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি সচেতন হতে হবে। প্রযুক্তির যেমন পজিটিভ দিক আছে, তেমনি এর অপব্যবহারের মাধ্যমে সমাজে নেতিবাচক প্রভাবও পড়ে। পার্বত্য চট্টগ্রামে দুর্বল নেটওয়ার্ক প্রযুক্তিনির্ভর যুবশক্তি গঠনে অন্যতম প্রধান বাধা। এই বাধা দূরীকরণে সরকারের ভূমিকা রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে যুব সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান বক্তারা। #