
নেপালের “আদিকবি” উপাধিপ্রাপ্ত ভানুভক্ত আচার্যের (১৮১৪-১৮৬৮) আজ ২১১ তম জন্মবার্ষিকী পালনের মাধ্যমে কবিকে গভীর শ্রদ্ধাচিত্তে স্মরণ করা হল রাঙ্গামাটিতে। কবিতা, গান, প্রবন্ধপাঠ, আলোচনা ও ভানুভক্তের জীবন সাহিত্য নিয়ে স্মারক গ্রন্থ প্রকাশের মাধ্যমে খুব জাঁকজমক পূর্ণভাবে উদযাপন করা হয়।
এই প্রথমবারের মতো জন্মবার্ষিকী পালন করা হলো বাংলাদেশে।
ভানুভক্ত নেপালী কবি, তিনি সংস্কৃত ভাষা থেকে রামায়ন নেপালী ভাষায় সহজ সরলভাবে অনুবাদ করে নেপালী ভাষার ভিত্তি মজবুত করেছিলেন। মূলত মাতৃভাষায় সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে ভানুভক্ত নেপালী ভাষার প্রচার প্রসারে যে অসামান্য অবধান রাখেন। উপরোক্ত ‘ঘাস’ কবিতাটি তাঁর অনেকগুলো বিখ্যাত কবিতার একটি।
রাঙ্গামাটির বনেদী সাংস্কৃতিক সংগঠন সুর নিকেতনের আয়োজনে এবং গুর্খা কল্যান ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানে সভাপতির আসন অলংকৃত করেন রাঙ্গামাটি গুর্খা সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব সুরনিকেতন প্রতিষ্ঠাতা ও কর্ণধার শিল্পী, সুরসাধক ও গবেষক মনোজ বাহাদুর গুর্খা। মূখ্য আলোচক হিসাবে আমন্ত্রিত ছিলেন অরণ্য গবেষক কতোকোবিদ ড. আজাদ বুলবুল। আলাচনা পর্বে অংশ নেন শিক্ষা গবেষক ড. শামসুদ্দীন শিশির, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাবেক কালচারাল অফিসার কবি মজিবুল হক বুলবুল, কবি হাসান মনজু, মোনঘর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক কবি ও সাংস্কৃতিক কর্মী শিশির চাকমা, রাঙ্গামাটি পাবলিক কলেজের প্রভাষক ও লেখক মুকুল কান্তি ত্রিপুরা, পাংখোয়া জনজাতির পথিকৃত গবেষক শাওন ফরিদ।
গান ও কথামালায় সাজানো ছিল পুরো অনুষ্ঠান। ভানুভক্ত আচার্যের জীবন ও কর্মকাণ্ডের স্তুতি নিয়ে রচিত ক্লাসিকাল ধারার গানগুলো পরিবেশন করেন সুর নিকেতনের শিল্পীবৃন্দ। বাচিক শিল্পী শিক্ষক ও কবি কামরুল হাসান ও বাচিক শিল্পী চৈতী ঘোষের চমৎকার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানটিকে প্রাণবন্ত করে রেখেছিল। #
কবির আলোচিত কবিতা সমূহের উল্লেখযোগ্য কবিতা।
“ঘাস”
“””””””
“ঘাস কাটার জন্য জীবন উৎসর্গ করে,
তিনি কিছু টাকা উপার্জন করল,
আর তাঁকে স্মরণ রাখার ইচ্ছায়
একটা কূপ খনন করল।
ঘাস কাটার লোকটা খুব গরীব;
কিন্তু কেমন তাঁর আত্মা!
আর আমি, ভানুভক্ত,
আমি সামর্থ্যবান হয়েও আমি কেন এমন?
কূপ, সরাইখানা বা বিশ্রামাগার;
আমি কিছুই তৈরি করিনি।
আমার সমস্ত সম্পদ,
ঘরেই পড়ে আছে।
আর এই ঘাস কাটার লোক থেকে
আমরা কী শিখব?
কোন ভালো কাজ না করে
অলস বসে থাকা লজ্জাজনক।।
– ভানুভক্ত আর্চারিয়া