Home লিড নিউজ বাংলাদেশে অকাল মৃত্যুর ২০ শতাংশই বায়ুদূষণে

বাংলাদেশে অকাল মৃত্যুর ২০ শতাংশই বায়ুদূষণে

25
0
বাংলাদেশে অকাল মৃত্যুর ২০ শতাংশই বায়ুদূষণে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বের দশটি সবচাইতে বেশি দূষিত বায়ুর শহরগুলোর মধ্যে নয়টি শহরই দক্ষিণ এশিয়ায় অবস্থিত। এর মধ্যে ঢাকা অন্যতম। বাংলাদেশে ২০ শতাংশ অকাল মৃত্যুর জন্য বায়ুদূষণ দায়ী।

আজ (মঙ্গলবার) বিশ্ব ব্যাংকের ‘বিশুদ্ধ বায়ু পাওয়ার চেষ্টা: দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ু দূষণ ও জনস্বাস্থ্য’ শীর্ষক গবেষণায় উঠে এসেছে এসব তথ্য। রাজধানীর একটি হোটেলে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

এতে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে বিভিন্ন দেশ তাদের নীতিমালা এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে এগিয়ে আসলে এসব অঞ্চলে বিশুদ্ধ বায়ু নিশ্চিত করা সম্ভব।

প্রতি ঘনমিটার বাতাসে পাঁচ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত দূষণকারী কণার উপস্থিতি থাকলে তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মান অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য ধরে নেওয়া হয়। অথচ দক্ষিণ এশিয়ার অনেক ঘনবসতিপূর্ণ ও দরিদ্র এলাকাতেই দূষণের মাত্রা অন্তত ২০ গুণ বেশি। এতে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতি বছর অন্তত ২০ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু হয়। একই কারণে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার ছয়টি প্রধান এয়ারশেড চিহ্নিত করা হয়েছে- যেখানে বাতাসের গুণমানে আত্মনির্ভরতা বেশি। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল এবং পাকিস্তান, ইন্দো গাঙ্গেয় সমভূমিতে বিস্তৃত একটি সাধারণ এয়ারশেড শেয়ার করে। প্রতিটি এয়ারশেডের কণা বিভিন্ন উৎস এবং অবস্থান থেকে আসে। উদাহরণস্বরূপ, ঢাকা, কাঠমান্ডু এবং কলম্বোর মতো অনেক শহরে, শুধুমাত্র এক-তৃতীয়াংশ বায়ুদূষণ শহরের মধ্যে উৎপন্ন হয়। বায়ুদূষণের আন্তঃসীমান্ত প্রকৃতিকে স্বীকৃতি দিয়ে, চারটি দক্ষিণ এশিয়ার দেশ- বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল এবং পাকিস্তান প্রথমবারের মতো ইন্দো-গাঙ্গেয় সমভূমি এবং হিমালয়ের পাদদেশে বায়ুর গুণমান উন্নত করার জন্য কাঠমান্ডু রোডম্যাপ তৈরি করতে একমত হয়েছে।

বাংলাদেশ ও ভুটানে বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক বলেন, বায়ু দূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বড় প্রভাব ফেলে। সঠিক পদক্ষেপ ও নীতির মাধ্যমে দূষণ রোধ সম্ভব। এজন্য জাতীয় পদক্ষেপের পাশাপাশি অঞ্চলিক (দক্ষিণ এশিয়া) পর্যায়েও সম্মিলিত প্রচেষ্টা গুরুত্বপূর্ণ।

রিপোর্টে তিনটি সুপারিশ করা হয়। সুপারিশগুলো হলো- ১. বড় শহরগুলোতে বায়ু দূষণ পর্যবেক্ষণ, মানুষের কাছে তথ্য দেওয়া এবং এয়ারশেড বিশ্লেষণ করতে ইনস্টিটিউট স্থাপনে সরকারের উদ্যোগ নেওয়া, ২. বড় বড় পাওয়ারপ্ল্যান্ট, ফ্যাক্টরি এবং যানবাহনের দূষণ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি কৃষি, বর্জ্য, চুলা, ইটভাটা ইত্যাদির মাধ্যমে হওয়া দূষণ নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। একইসঙ্গে এয়ারশেডের পরিধি সম্পর্কিত মানদণ্ড নির্ধারণ করা প্রয়োজন এবং ৩. বায়ু দূষণ রোধে যথাযথ বিনিয়োগ করতে হবে।

বিশ্ব ব্যাংক মনে করে, বৃহত্তর অগ্রগতির জন্য কৃষি, আবাসিক রান্না ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দিকেও দৃষ্টি দিতে হবে নীতিনির্ধারকদের। সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ায় বছরে প্রায় সাড়ে সাত লাখ মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here