নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের সবচেয়ে বেশি দূষণের শিকার মেঘনা অববাহিকার নদ-নদী। এখানে প্রায় ত্রিশ নদীতে মাত্রাতিরিক্ত শিল্প বর্জ্য, পৌরসভার আবর্জনা ও প্লাস্টিক দূষণে অক্সিজেনের মাত্রা অসহনীয় হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি রিভার এন্ড ডেলটা রিসার্চ সেন্টার–আরডিআরসি বলছে, পদ্মা ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার ৫৬ নদী বয়ে চলেছে চরম দূষণ নিয়ে।
নদীকে ঘিরেই মানব জাতির প্রগতি। তাই পানি ও জীবন সমার্থক। এককালে বাংলাদেশের পরিচয় ছিল নদীমাতৃক দেশ। মাত্রাতিরিক্ত দূষণে হারিয়ে গেছে সেই পরিচয়।
রাজধানীর বুড়িগঙ্গা, তুরাগ থেকে শুরু করে গাজীপুরের লবণদহ, নরসিংদীর হাঁড়িধোয়া, হবিগঞ্জের সুতাং সহ মেঘনা অববাহিকার প্রায় সব নদীই মারাত্মক দূষণের শিকার। চারপাশে শিল্প কারখানা ,পৌরবর্জ্য ও প্লাস্টিকে পানির মান অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠেছে।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিভার এন্ড ডেলটা রিসার্চ বলছে, এই দূষিত পানি লক্ষ্মীপুর হয়ে মিশছে বঙ্গোপসাগরে। সংস্থাটির চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ এজাজ জানান, প্রায় আড়াইশ শিল্প-কলকারখানা ময়লা এবং আশেপাশের পৌরসভার আবর্জনা ও প্লাস্টিক নিয়ে তুরাগে পড়ে। সুতরাং তুরাগের যত দূষণ আমরা দেখি তার ৩০ শতাংশ দূষণ আসে লবণদহ থেকে।
তিনি আরও বলেন, এখানে মানুষ বসবাস তো একেবারে সম্ভব না আর প্রাণী জীবিত থাকা তো অনেক দূরের কথা। এখানকার পানি শরীরে লাগলে সেখানে চুলকানি ঘা শুরু হয়ে যাচ্ছে। আর এই পানি জোয়ারের সময় ছড়িয়ে যাচ্ছে আশপাশের ধানের বা ফসলের জমিতে। এর মধ্যে দিয়ে এই পুরো অঞ্চলটিই দূষণের কবলে পড়ে যাচ্ছে।
মারাত্মক দূষণের মুখে বরিশাল বিভাগের ভোলা, আন্দারমানিক, বলেশ্বরসহ সব নদী। এই এলাকায় শিল্পবর্জ্য না থাকলেও আছে মাত্রাতিরিক্ত প্লাস্টিক দূষণ।
গবেষকরা বলছেন, দেশে মিঠা পানির উৎসের বড় সংকট। তাই নদী দূষণ ও প্রবাহ ঠিক না রাখতে পারলে বড় বিপদের মুখে পড়বে দেশ।